Lina medina-world’s youngest mother

পৃথিবীর সবচেয়ে কম বয়সী মা – লীনা মেদিনা।
১৯৩৯ সালের ১৪ই মে, মাত্র ৫ বছর ৭ মাস ২১ দিন বয়সে লীনা ছেলে সন্তানের জন্ম দেয়।বয়স কম হওয়াতে সন্তান জন্ম দেয়ার মতো পেলভিস তার ছিল না। সেজন্য ডাক্তারদের সিজারিয়ান অপারেশনের সাহায্য নিতে হয়েছিল।
বিষয় টা অস্বাভাবিক মনে হলেও সত্যি।

অস্বাভাবিকভাবে পেট বড় দেখালে লীনা কে তার বাবা মা হসপিটালে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বলেন। তার বাবা মা ভেবেছিলেন হয়তো টিউমার হবে। ডা.গেরারডো লোজাডা নিজেও সংশয়ে ছিলেন এত কম বয়সী মেয়ে কিভাবে অন্তঃসত্ত্বা হয়! তাই তিনি লীনা কে পেরুর রাজধানী লিমা তে নিয়ে তখনকার সময়ের বিখ্যাত একজন ডাক্তার কে দেখান। এবং সে ডাক্তার ও লীনা কে অন্তঃসত্ত্বা ঘোষণা করেন।

জন্মের সময় মেদীনার ছেলের ওজন ছিল ২.৭ কেজি এবং তার চিকিৎসকের নামে “গেরারডো” নাম রাখা হয় ছেলের। গেরারডো দশ বছর বয়স পর্যন্ত বিশ্বাস করতো মেদীনা তার বোন, তারপর ১০ বছর বয়সে সব সত্য জানানো হয়। সে সুস্থ ভাবেই বেড়ে ওঠে কিন্তু ৪০ বছর বয়সে বোনম্যারোর রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে।
মেদীনা কখনোই তার সন্তানের পিতা এবং তার গর্ভধারণের রহস্য প্রকাশ করেননি। তবে ডা. স্কোমেল তার এক লেখায় উল্লেখ করেছিলেন যে, মেদীনা সত্যিকার্থে তার গর্ভধারণের রহস্য জানেনা।

শিশু যৌন নিপীড়নের দায়ে তার বাবাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, কিন্তু তার বিরুদ্ধে কোন প্রমাণ না পাওয়তে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। এবং তার সন্তানের সত্যিকার বাবা কে তা অনেক চেষ্টার পরও এখনো উম্মোচন করা সম্ভব হয়নি। অপরদিকে আজও এর ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি যে, ৫ বছরের একটি শিশু কি করে গর্ভবতী হয়।

যৌবনে মেদীনা ডা. লোজাডার লিমা ক্লিনিকে সহকারীর চাকুরী করেন। ডা. লোজাডা তাকে এবং তার ছেলেকে শিক্ষিত করে তোলেন। ১৯৭২ সালে মেদীনা রাউল জরডো কে বিয়ে করেন।

কিন্তু কীভাবে গর্ভবতী হল ছোট্ট মেয়েটি?
বড় হয়ে লিনা নিজে কখনও এ বিষয়ে মুখ খোলেনি। লিনার সন্তানের বায়োলজিক্যাল বাবার নাম কখনোই জানা যায়নি।

যেহেতু সন্তানের বাবা সম্পর্কে কিছুই জানা যায় না তাই তার শিশু বয়সে মা হবার ক্ষেত্রে দুটি কারণ অনুমান করা যায়- ১. অনাকাঙ্ক্ষিত যৌনতার শিকার; ২. ছেলেটা তার যমজ ভাই।

ছেলেটা কীভাবে যমজ ভাই হয়!!!?

তার গর্ভ থেকে আসা সন্তান কীভাবে তারই যমজ ভাই হতে পারে? ব্যাপারটা একটু চমকপ্রদ। পেটের ভেতর বাচ্চাও সহোদর হতে পারে। এমন বিপত্তিকর শর্তে এমনকি একজন পুরুষের পেটেও বাচ্চা হতে পারে।

মায়ের পেটে যখন যমজ সন্তানের উদ্ভব হয় তখন দুটি আলাদা আলাদা ভ্রূণের সৃষ্টি হয়। ভ্রূণ দুটি পাশাপাশি অবস্থান করে। পাশাপাশি অবস্থান করা দুই ভ্রূণের কোনো একটি ভ্রূণ তুলনামূলকভাবে অধিক পরিমাণ খাদ্য-পুষ্টি গ্রহণ করে অপর ভ্রূণের চেয়ে সবল ও বড় আকারের হয়ে যেতে পারে। এমন অবস্থায় কোনোভাবে ছোট ভ্রূণটি যদি বড় ভ্রূণের ভেতরে ঢুকে যায় বা বড়টি ছোটটিকে গ্রাস করে নেয় তাহলে ভেতরে থাকা ভ্রুণটি আর বিকশিত হতে পারে না।

ছোটটিকে ভেতরে দমিয়ে রেখে বড়টি ধীরে ধীরে বেড়ে উঠে এবং এক সময় ভেতরে রেখেই মায়ের পেট থেকে বেরিয়ে আসে। ছোটটি তখন খাদ্য গ্রহণ করে থাকে বড়টির দেহ হতে। বড়টি যখন বাইরের পৃথিবীতে খেলছে দুলছে তখন ভিতরে ছোটটি অল্প অল্প করে আকারে বাড়ছে। দেখতে দেখতে একসময় সকলে লক্ষ করে খেলাধুলা করে বাড়ানো ছেলে/মেয়েটির পেট ফুলে উঠছে ধীরে ধীরে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সকলে মনে করে পেটে টিউমার হয়েছে। প্রথম দিকে গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খায় বা সামান্য চিকিৎসা করে চালিয়ে দেয়। কিন্তু এমন সমস্যা কি গ্যাস্ট্রিকের ওষুধে কিংবা টোটকা ওষুধে শেষ হবার জিনিস? সমস্যার সমাধান না হলে একসময় প্রচুর ব্যাথা ও যন্ত্রণা হয়। এমন পরিস্থিতিতে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করানো হলে দেখা যায় পেটে বাচ্চা।

স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে এই পদ্ধতিতে বাচ্চা নারীর পেটেও হতে পারে আবার পুরুষের পেটেও হতে পারে। এখানে উল্লেখ রাখা দরকার এসব অনাকাঙ্ক্ষিত বাচ্চাগুলো পূর্ণ বিকশিত হয় না, ত্রুটিপূর্ণ ও অবিকশিত হিসেবে জন্ম দেয়। কোনো কোন ক্ষেত্রে বাচ্চা বলতে যা বোঝায় তাও হয় না।

এখানে আরো একটা কথা বলার থাকে, যদি ধরে নেয়া হয় বাচ্চা বেঁচে গেল কোনোভাবে, সুস্থই রইল কয়েক বছর, তবুও সে বায়োলজিকালী তার সন্তান নয়। শিশুটি হবে তার ভাই অথবা বোন। কারণ তারা জমজ হিসেবে মায়ের পেটে উৎপত্তি লাভ করেছিল।

মেদিনার ক্ষেত্রে ও এমন টা হতে পারে। তবে, সত্য একমাত্র সৃষ্টিকর্তা ই জানেন।
উল্লেখ্য, ১৯৩৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর জন্ম নেয়া লীনা মেদিনা এখনো জীবিত আছেন। বর্তমানে উনি ৮৭ বছরেই বৃদ্ধা।

Design a site like this with WordPress.com
Get started